৭২ ঘণ্টার হরতাল চলছে
সারাদেশে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা ৭২ ঘণ্টার হরতাল মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো চলছে ।
রোববার সকাল ৬টায় এ হরতাল শুরু হয়েছে। হরতাল চলবে আগামিকাল বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ এ হরতালের ঘোষণা দেন। এর ফলে টানা চার সপ্তাহ ধরে শুক্র ও শনিবার সকারি ছুটির দিন বাদে সব কর্মদিবসেই হরতাল দিলো ২০ দল।
বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশব্যাপী ক্রসফায়ারের মাধ্যমে অসংখ্য নেতা-কর্মীকে হত্যা ও গুলি করে পঙ্গু ও আহত, দেশব্যাপী বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীসহ নিরীহ জনগণকে গণগ্রেফতার, বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ ও কুক্ষিগতকরণ, বেগম খালেদা জিয়াকে অভুক্ত রেখে হত্যার ষড়যন্ত্র এবং সাংবাদিক নির্যাতন ও সংবাদ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের প্রতিবাদে এবং জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচন, জনগণের মৌলিক ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও সকল রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে ২০ দলীয় জোটের উদ্যোগে চলমান অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি পুনরায় রোববার সকাল ৬ টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী সর্বাত্মক হরতাল পালিত হবে।
এদিকে সারাদেশে সকাল থেকে তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে জনজীবনে হরতালের কোনো প্রভাব পড়েনি। অন্যান্য দিনের মত কর্মস্থলে যাওয়ায় ব্যস্ত রয়েছেন রাজধানীবাসী। তাদের জীবনযাত্রা অনেকটা স্বাভাবিকই রয়েছে।
পোশাক শ্রমিক থেকে শুরু করে সর্বস্তরের পেশাজীবী মানুষ সকাল থেকে ছুটছেন কর্মস্থলের দিকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সংখ্যাটাও বেড়ে চলেছে। এর মধ্যে মিরপুর-১০, ১১, ১২ ও ১৩ নম্বরসহ যেসব এলাকায় পোশাক কারখানা রয়েছে সেখানে প্রচুর পরিমাণে কর্মজীবীদের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে।
অন্যদিকে, হরতাল-অবরোধে গাড়ির সংকট চোখে পড়ছে না। নগরীতে প্রয়োজনীয় গাড়ি রয়েছে এবং তা প্রতিদিনের মতো আজও স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। আজ রাজধানীতে হরতালের সমর্থনে কোনো মিছিল বা পিকেটিং হয়নি। এছাড়া, সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন।
হরতাল-অবরোধকে ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মোতায়েন রয়েছে পুলিশ ও বিজিবি। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের যৌথ টহল টিম নামানো হয়েছে।
ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও নির্ধারিত সময়ের পর সেগুলো ছাড়ছে।
এদিকে দেশের বিভিন্ন জেলায়ও চলছে শান্তিপূর্ণ হরতাল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক প্রহরার মধ্যেও হরতাল-অবরোধের সমর্থনে বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত মিছিল-পিকেটিং করছে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা। জেলা সদর, নগর-মহানগরগুলোতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। দূরপাল্লার সড়কে কিছু হালকা যানবাহন চলাচল করার খবর পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, গত ৬ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। এরসাথে শুক্র ও শনিবার বাদে সপ্তাহের বাকিদিন গুলোতে চলছে হরতাল।
প্রতিক্ষণ /এডি/রাহাত